শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৮ অপরাহ্ন

আত্মসমর্পণ করে সাবেক বিচারপতির জামিন, ছেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আত্মসমর্পণ করে সাবেক বিচারপতির জামিন, ছেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্বদেশ ডেস্ক:

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো.জয়নুল আবেদীন। তবে তার ছেলে মো. ফয়সাল আবেদীন পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আজ বুধবার ঢাকার মহানগর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. বদরুল আলম ভূঞার আদালত এ আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কোর্টে আজ মামলাটির প্রথম তারিখ ধার্য ছিল। আজ সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীন আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত তা মঞ্জুর করেন। তবে তার ছেলে ফয়সাল আবেদীন আদালতে আসেননি। এজন্য দুদকের পক্ষ থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আগামী ৫ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।’

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই মামলা দায়ের করে দুদক। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক গোলাম মাওলা সম্প্রতি দুই জনের বিরুদ্ধর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

জানা যায়, সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের মোট সম্পদ এক কোটি ৩২ লাখ ৩৯ হাজার ১৭৪ টাকা। তার ১৯৮২-১৯৮৩ কর বর্ষ থেকে ২০১০-১১ কর বর্ষ পর্যন্ত পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছে ৬৪ লাখ ৭৪ হাজার ৩৯ টাকা। পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ অর্জিত সম্পদ ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ২১৩ টাকা। এর বিপরীতে আয়ের উৎস পাওয়া যায় ১ কোটি ৮৭ লাখ ৬৩ হাজার ৩০৪ টাকার। তার আয়ের তুলনায় ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৯ টাকা বেশি সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে আরও জানা গেছে, বিচারপতি জয়নুল আবেদীন তার ছেলেকে ২৬ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছিলেন বলে ঘোষণা দেন। যা তার ছেলে ফয়সাল আবেদীনের আয়কর নথিতে উল্লেখ রয়েছে। উক্ত ঋণ পরিশোধের তথ্য তার ছেলের আয়কর নথিতে উল্লেখ আছে। কিন্তু বিচারপতির আয়কর রিটার্নে ২৬ লাখ টাকা ঋণ দান এবং ফেরত প্রাপ্তির কোনো তথ্য নেই। বিচারপতির দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে দাখিল করা ব্যাংক স্টেটমেন্টে (২০০৫-২০০৬ এবং ২০০৬-২০০৭ অর্থবছর ) তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ২৬ লাখ টাকা উত্তোলনের তথ্য নেই। ফয়সাল আবেদীনের আয়কর নথিতে তার দায় ক্রমান্বয়ে পরিশোধ দেখানো হলেও বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের কাছে টাকা পরিশোধের কোনো দালিলিক প্রমাণ পাওয়া পাওয়া যায়নি। যা থেকে দুদক প্রমাণ পেয়েছে সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীন তার অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ বৈধ করার জন্য ২৬ লাখ টাকা তার ছেলে ফয়সাল আবেদীনের ফ্ল্যাটে বিনিয়োগ করেন।

এ ছাড়া মো. জয়নুল আবেদীন তার স্ত্রীর নামে ৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ থাকার হিসাব দাখিল করেন। দুদকের তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগদখলে রাখা এবং ছেলে ফয়সাল আবেদীনকে ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য দেওয়া ২৬ লাখ টাকা নিজ আয়কর নথিতে ও দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে প্রদর্শন না করে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। মো. ফয়সাল আবেদীন বাবা ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত ২৬ লাখ টাকা জেনে শুনে বৈধ করার জন্য সম্পত্তি ক্রয় ও দখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন। সাবেক এ বিচারপতি ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সময় জুডিশিয়ারি তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বলে জানা যায়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877